ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর পালন করবে বিএনপি ও জাসদ সহ বিভিন্ন দল।

প্রকাশিত: ১২:০২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৪

শারফুদ্দীন সোহেল:

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর আজ। দেশের রাজনীতির গতি পরিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁক এই ৭ নভেম্বর। ক্যু-পালটা ক্যুসহ অনেক নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালের এদিনে জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসার পথ সুগম হয়।

৭ নভেম্বরের ঘটনা প্রবাহকে মূলত স্বাধীনতাযুদ্ধের দুই সেক্টর কমান্ডার ও সাহসী সেনানী মেজর জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও কর্ণেল আবু তাহের বীর উত্তম এর দ্বন্দ্ব হিসেবে বিশ্লেষণ করা হয়। এখন যা বিএনপি ও জাসদের দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজিক ঘটনাবলি বিমূঢ় করে রেখেছিল দেশকে। তবে এ কথা সত্য যে, ৭ নভেম্বরের পর ইতিহাসের বাঁকবদল হয়েছে।

ইতিহাস বিশ্লেষকদের মতে, ১৫ আগষ্ট হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতার লড়াইয়ে তখন দুটো পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। একদিকে মেজর জিয়াউর রহমান এবং অন্যদিকে জাসদ। ১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বর জাসদ একটি ‘অভ্যুত্থান’ সংঘটিত করতে পেরেছিল, যার সুফল জাসদের ঘরে না গিয়ে জিয়াউর রহমানের ভাগ্য বদল করে দিয়েছিল। এই অভ্যুত্থানের পরিকল্পনাকারী বা রূপকার কর্নেল তাহের বীর উত্তম। তাহেরের নির্দেশে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও জাসদের গণবাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় সাধারণ সৈনিকদের সাথে নিয়ে এইদিন বন্দি মেজর জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেন। পরবর্তীতে জিয়া-তাহের এর রাজনৈতিক মতার্দশের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যার ফলে জিয়ার সামরিক আদলতে তাহেরের ফাঁসি দেওয়া হয়। ক্ষমতার লড়াইয়ে জিয়াউর রহমানের কাছে পরাজিত হয় কর্ণেল তাহের, তথা জাসদ।

৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব এবং সংহতি দিবস’ উপলক্ষ্যে বরাবরই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।

সরকার-পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন পরিস্থিতিতে এ বছর আড়ম্বরে দিবসটিকে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। ইতোমধ্যে ঘোষিত হয়েছে ১০ দিনের কর্মসূচিও। দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা এরইমধ্যে ৭ নভেম্বরকে উদযাপন করতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। সারা দেশে জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ডের পরিচিতিমূলক প্রচারণাকে প্রাধান্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে বিএনপি।

অন্যদিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসাবে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দিবসটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ হিসেবে দিনটি পালন করে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ নানা কর্মসূচি পালন করবে। জাসদের পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। এতে জাসদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

বিগত ১৫ বছর এদিনটিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন সারা দেশে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। তবে এবছর বর্তমান পরিস্থিতে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেছে।

এছাড়াও জেএসডি এবং বাংলাদেশ জাসদসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দিনটিকে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।